ডলার-সংকট
তবু গ্যাস আমদানির বড় বড় চুক্তি
১৫ বছর মেয়াদি তিনটি চুক্তি হয়েছে। আরেকটি হবে। ২০২৬ সালের জুনে গ্যাস আমদানি প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়তে পারে।
দেশে মার্কিন ডলারের সংকটের মধ্যেই আরও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির চুক্তি করছে সরকার। গত বছরের জুন ও নভেম্বরে তিনটি চুক্তি হয়েছে। আরেকটি চুক্তি শিগগিরই হতে পারে।
চারটি চুক্তির অধীনে ২০২৬ সালের জুন থেকে আমদানি করা এলএনজি সরবরাহের কথা দিনে ১৭০ কোটি ঘনফুট। এখন সক্ষমতা রয়েছে ১১০ কোটি ঘনফুট। তবে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সরবরাহ করা হয়েছে দিনে ৯০ কোটি ঘনফুটের কম।
বাড়তি গ্যাস তরল অবস্থায় এনে তা রূপান্তরের জন্য নতুন টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে, যার কাজ শুরু হয়নি। বাড়তি গ্যাস সরবরাহের জন্য নতুন পাইপলাইন দরকার। সেই প্রকল্পে অর্থায়নও নিশ্চিত হয়নি।
গ্যাসের চাহিদা মেটাতে সক্ষমতা বুঝেই আমদানির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সক্ষমতায় যতটুকু ঘাটতি মনে হচ্ছে, তা ২০২৬ সালের মধ্যে পূরণ করার জন্য ইতিমধ্যেই নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী এলএনজি না কিনে জরিমানা পরিশোধের পরিস্থিতি তৈরি হবে না।পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার
ডলার–সংকটের কারণে বাড়তি গ্যাস আমদানি করতে না পারায় সরকার দেশে উত্তোলনে জোর দিয়েছে। এমন সময়ে কেন দীর্ঘমেয়াদি আমদানি চুক্তি এবং চুক্তি অনুযায়ী গ্যাস আনতে ডলার কোথা থেকে আসবে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুক্তি অনুযায়ী আমদানিতে ব্যর্থ হলে বিদ্যুৎ খাতের কেন্দ্রভাড়া বা ক্যাপাসিটি চার্জের মতো মাশুল দিতে হতে পারে।
বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, নতুন বছর শুরুর আগে কতটুকু গ্যাস আমদানি করা হবে, তা জানালে চুক্তির ন্যূনতম পরিমাণের চেয়ে ১০ শতাংশ গ্যাস কম আনার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া সূচি অনুসারে কোনো চালান আমদানির সিদ্ধান্ত দুই মাস আগে বাতিল করলে তা অন্য জায়গায় বিক্রি করে দেয় সরবরাহকারীরা। এ ক্ষেত্রে চুক্তির দামের চেয়ে কম দামে বিক্রি হলে জরিমানা দিতে হয়। এই শর্তটিও সর্বোচ্চ ১০ শতাংশের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায়।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের চাহিদা মেটাতে সক্ষমতা বুঝেই আমদানির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সক্ষমতায় যতটুকু ঘাটতি মনে হচ্ছে, তা ২০২৬ সালের মধ্যে পূরণ করার জন্য ইতিমধ্যেই নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী এলএনজি না কিনে জরিমানা পরিশোধের পরিস্থিতি তৈরি হবে না।
অবশ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎ খাতেও একই ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয়েছিল। এখন চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি উৎপাদন সক্ষমতা তৈরি করে বছরে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রভাড়া দিতে হচ্ছে, যা পুরো অর্থনীতিতেই সমস্যা তৈরি করছে।
বিদেশ থেকে গ্যাস দুইভাবে কেনা হয়। একটি হলো দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যার মাধ্যমে গ্যাস আসে কাতার ও ওমান থেকে। অন্যটি খোলাবাজার থেকে কেনা, যেখানে গ্যাসের দামে ব্যাপক ওঠা–নামা হয়। আমদানি করা গ্যাসের ৭০ শতাংশের মতো আসে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি থেকে।
নতুন চার চুক্তি